আমাদের শরীরের সবচেয়ে অবহেলিত অংশ হল দাঁত। শরীরের অন্যান্য অংশের যত্নে আমরা যতটা সময় ব্যয় করি তার সিকিভাগও দাঁত এর যত্নে করি না। একটি প্রচলিত কথা আছে মানুষ “দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝে না”। নিয়মিত দাঁত এর যত্ন না নিলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে যেমন-দাঁতে প্লাক/ক্যালকুলাস জমে যাওয়া, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, ক্যাভিটি, দাঁতের প্রদাহ/পাল্পাইটিস, ইনফেকশন, ক্যানসার।
এছাড়াও আরো অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। এসব রোগ এর বেশিরভাগই প্রতিরোধ যোগ্য। দাঁত ও মুখগহ্বর এর নিয়মিত যত্নেই বেশিরভাগ রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। সাধারণত মানুষ মুখের যত্ন বলতে শুধু দাঁত মাজা/ব্রাশ করাকেই বুঝে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে শুধুমাত্র দাঁত ব্রাশ করেই মুখের যত্ন শেষ ভাবাটা বোকামি।
দাঁতের যত্নে-
১. প্রতিদিন সকালে নাস্তার পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করতে হবে টুথপেষ্ট এবং ব্রাশ দিয়ে৷ গ্রামাঞ্চলের অনেকেই এখনো টুথ পাউডার/কয়লা ছালি ব্যবহার করেন। যা অবশ্যই পরিহার করা উচিত।
২. সাধারণত ব্রাশ আমাদের দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে আটকে থাকা খাবার পরিষ্কার করতে পারেনা। এর জন্য সবারই উচিত খাওয়ার পর ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা। এই কাজে অনেকেই টুথপিক ব্যবহার করেন। যা অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
৩. এছাড়াও মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা যায়। বাজারে প্রচলিত যেকোন একটা ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়াও মাউথ ওয়াশ এর বিকল্প হিসেবে আপনারা কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।
৪. অনেকেরই কিছু বদ অভ্যাস আছে। পান-সুপারি খাওয়া, ধূমপান করা। এই অভ্যাসগুলা আমাদের দাঁত ও মুখগহ্বর এর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ পান-সুপারি এবং ধূমপান। সকলের উচিত ধূমপান ও পান সুপারি পরিহার করা।
৫. সবারই উচিত বছরে অন্তত দুবার একজন ডেন্টাল সার্জন দ্বারা নিজের মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া। আর মুখগহ্বর ও দাঁত এর যেকোন সমস্যায় ডেন্টাল সার্জন এর পরামর্শ গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে আপনারা অবশ্যই বিডিএস ডিগ্রীধারী ডেন্টাল সার্জনের কাছেই যাবেন। মনে রাখবেন বিডিএস নয় তো ডেন্টিস্ট নয় সবার সুস্থতা কামনা করছি। সবাই বাসায় থাকুন। সুস্থ থাকুন।
লেখক: ডা. সুস্মিতা হক, বিডিএস (সিএমসি)
সৌজন্যেঃ ডক্টরস এন মেডিসিন
Powered by Facebook Comments