ঢাকার বুকে এক অসামান্য ঐতিহাসিক স্থাপনা আহসান মঞ্জিল। এটি শুধু স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব নিদর্শন নয়, বরং ঢাকার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজকের ভিডিওতে আমরা জানব আহসান মঞ্জিলের অতীত, বর্তমান এবং এর নান্দনিক বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে।
আহসান মঞ্জিলের প্রতিষ্ঠা ১৮৭২ সালে। ঢাকার নবাব পরিবারের বসবাসের জন্য নির্মিত এই মঞ্জিলটি ব্রিটিশ ভারতে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র ছিল। এর নামকরণ করা হয় নবাব আবদুল গণির পুত্র খাজা আহসানউল্লাহর নামে। মঞ্জিলটি ব্রিটিশ আমলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
আহসান মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী মুগ্ধ করার মতো। এর সমন্বিত মুঘল এবং ইউরোপীয় স্থাপত্যের নমুনা এটিকে অনন্য করেছে। ১৩২ ফুট দৈর্ঘ্যের এই প্রাসাদের গম্বুজ, অলংকৃত দরজা-জানালা এবং ভেতরের শোভাময় সজ্জা মঞ্জিলের আভিজাত্যের প্রতীক।
বর্তমানে আহসান মঞ্জিল বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ হিসেবে সংরক্ষিত এবং একটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শনার্থী এখানে আসে। যদিও অনেক সংস্কার কাজ করা হয়েছে, তবুও কিছু অংশে সময়ের ছাপ স্পষ্ট। সরকারিভাবে এর রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি উন্নয়নকাজও চালানো হচ্ছে।
দীর্ঘ সময় জুড়ে কোন এক অজানা কারণে অনাদর-অবহেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি ঢাকাই ঐতিহ্যের ধারক এই আহসান মঞ্জিল যা এখনও স্পষ্ট। আহসান মঞ্জিলের মেইন ফটকের সামনে পড়ে আছে নোংরা আবর্জনার স্তুপ। আর ভাসমান ফল বিক্রেতাদের বাজার বসে এখানে। এটা যে একটা ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা বাইরের পরিবেশ দেখে মোটেও সেরকম মনে হবে না।
আধুনিক ঢাকায় আহসান মঞ্জিল কেবলমাত্র একটি স্থাপনা নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং সংস্কৃতির প্রতীক। এই ঐতিহাসিক স্থান আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় পুরনো ঢাকার ঐশ্বর্যপূর্ণ দিনগুলোর কথা। আহসান মঞ্জিল আজও আমাদের কাছে স্মৃতি এবং গৌরবের উৎস।