কলা গাছে পাতায় দাগ বা সিগাটোকা (Leaf spot or Sigatoka) রোগটি সারকোস্পোরা মুসি (Cercospora musae) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এটি কলার একটি মারাত্নক রোগ, এর আক্রমনে চাষী ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হয়।
রোগের বিস্তারঃ
রোগের জীবানুর উৎপাদন বর্ষাকালে ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। জীবানু বৃষ্টিপাত, বাতাস, রোগাক্রান্ত পুরাতন শুকনা পাতার মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। তাই বর্ষাকালে রোগের আক্রমন বেশী দেখা যায়। তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সেঃ-এর পরে হলেও রোগের প্রকোপ বাড়ে।
রোগ আক্রমনের লক্ষণঃ
●প্রথমে পাতাতে শিরামধ্যবর্তী অঞ্চলে শিরার সমান্তরালভাবে সাজানো হলুদ বা বাদামী সরু এবং লম্বাটে দাগ দেখা যায়।
●দাগগুলি পরে বেড়ে গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির হয়।
●দাগগুলি পুরাতন হলে তার কেন্দ্র ধুসর সাদাটে বর্ণ ধারন করে, কিনারা গাঢ় কাল এবং তার চারপাশে হলুদ আভাতে ঘেরা থাকে।
●ছোট ছোট দাগ একত্রিত হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে।
●পুরাতন দাগ গাঢ় বাদামী বা কাল রং ধারন করে।
●রোগের আক্রমন বেশী হলে পাতার অনেক অংশ নষ্ট হয়ে যায়।
●ব্যাপকভাবে আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে ঝলসে যায় ও পোড়া মনে হয়।
●ফল ছোট আকারের হয়, অকালে পেকে যায় ও ফলন কম হয়।
রোগের প্রতিকারঃ
●রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে।
●রোগমুক্ত চারা লাগাতে হবে।
●পাতলা করে গাছ লাগাতে হবে।
●আক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত পাতা কেটে ফেলে রোগের তীব্রতা কমানো যায়।
●২-৩ মাস পর পর গাছের নীচের দিকের পাতাগূলো সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
●জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
●রোগের প্রাদুভাবের সংগে সংগে সমস্ত গাছে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ গ্রাম অথবা প্রোপিকোনাজোল গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে।
[তথ্য সংগ্রহীত]
Powered by Facebook Comments