কুমিল্লায় জনপ্রিয় হচ্ছে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জমি ডুবে যাওয়ার কারণে এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা হচ্ছে। এতে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক, হাতের কাছে নিরাপদ সবজি পাচ্ছেন ভোক্তারা।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় কয়েকটি গ্রামে পানিতে ভাসমান বেডে সবজির চাষ করা হচ্ছে। একজনের চাষ দেখে অন্যরাও এগিয়ে এসেছেন।কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, নাঙ্গলকোট উপজেলার তুগুরিয়া গ্রামে প্রথমে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করেন মানছুরা আক্তার।
তিনি বলেন, বাড়ির পাশের পুকুরে তিনি ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করেন। তার বেডে ঢেঁড়শ, বেগুন, লাউ ও টমেটো চাষ করা হয়েছে। একটা লাউয়ের ওজন ১০ কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বেডের সবজি নিজেরা খেয়েছেন, প্রতিবেশীদেরও দিয়েছেন। বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়েছেন। বাড়ির কাজের পাশে তিনি সবজির বেডের পরিচর্যা করেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ পেয়ে তিনি উপকৃত হয়েছেন।
একই গ্রামের কৃষক আমান উল্লাহ। বর্তমানে সবজি চাষ করার জন্য তার উঁচু জমি নেই। তিনি কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের খালে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করেন।
তিনি বলেন, এলাকার খালে প্রচুর কচুরিপানা। কচুরিপানার স্তুপ দিয়ে তিনি বেড তৈরি করেন। কচুরিপানা পচা বেডে সবজির চারা রোপণ করলে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার দিতে হয় না। এতে সবজি থাকে নিরাপদ। নিরাপদ সবজির চাহিদাও প্রচুর। তার বেডে মিষ্টি কুমড়া, লাউ, কলমি শাক ও লাল শাকের চাষ করা হয়েছে। তাদের দেখে ভাসমান সবজির চাষ করেন আরও অনেকেই।
স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার বলেন, এই এলাকাটি নিচু। এই সময়ে সবজির জমি পানিতে ডুবে থাকে। তাই তাদের পানিতে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তাছাড়া খাল-জমি দখল করে থাকা কুচুরিপানা কাজে লাগানো যাচ্ছে। কয়েকজন কৃষককে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিতে ফরিদগঞ্জে নেওয়া হয়। অনেকে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে লাভবান হয়েছেন। অন্য কৃষকরাও এই পদ্ধতিতে সবজি চাষে এগিয়ে এলে তারা ভালো দাম পাবেন, বাজারে সবজির জোগান বাড়বে।
সৌজন্যেঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।
Powered by Facebook Comments