স্নুকার বা বিলিয়ার্ড খেলা আবিষ্কৃত হয়েছিল এই ভারতীয় উপমহাদেশেই। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা, নেভিল চেম্বারলিন, খেলাটি ভারতের জব্বলপুরে বসে প্রথম খেলেছিলেন।
চেম্বারলিন তখন ডেভোনশায়ার রেজিমেন্ট নিয়ে জব্বলপুরে অবস্থান করছিলেন। সময়টা ১৮৭৫ সাল। স্রেফ অবসর কাটাতে গিয়েই এই খেলার ভাবনা মাথায় আসে চেম্বারলিনের। ওটাক্যামান্ড ক্লাবে তিনি প্রথম স্থাপন করেন বিলিয়ার্ড টেবিল। তিনি নিজেই এই টেবিলের নকশা তৈরি করেছিলেন। তৈরি করেছিলেন এই খেলায় ব্যবহৃত বিলিয়ার্ড স্টিক ও বিভিন্ন রঙের বল। খেলাটির আইনকানুনও তৈরি করেছিলেন চেম্বারলিন নিজেই।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা চাকরিজীবনে জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। পরে তাঁকে নাইটহুড দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
বিশ্বব্যাপী স্নুকার বা বিলিয়ার্ড খেলা একটি ব্যাপক প্রচলিত খেলা হলেও বাংলাদেশে এই খেলার গতি সীমাবদ্ধ।
ঢাকার নওয়াব পরিবারকে এদেশে আধুনিক ক্রীড়া প্রচলনের অগ্রদূত বলা হয়ে থাকে। হকি, ক্রিকেট প্রভৃতির মতো আধুনিক খেলা তাঁরা ঢাকায় প্রথম প্রবর্তন করেন তাঁরা। কলকাতার অনুকরণে খাজা পরিবারের উদ্যোগে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ ঢাকায় মোহামেডান ইউনিয়ন স্পোর্টিং ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এই পরিবারে অনেক খ্যাতনামা ক্রিড়াবিদের জন্ম হয়েছিল। আউটডোর খেলাধুলার পাশাপাশি ঢাকার নওয়াবগণ ইনডোর খেলারও বিশেষ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বাংলাদেশে স্নুকার বা বিলিয়ার্ড খেলা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও ঢাকার নওয়াব পরিবারকে অগ্রদূত মনে করা হয়। ‘আহসান মঞ্জিল’ এর অভ্যন্তরে বিলিয়ার্ড খেলার বিশাল একটি কক্ষ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। উচ্চ পদস্থ রাজকর্মচারী ও ঢাকায় আগত ইংরেজ বন্ধুদের অন্যান্য সব আপ্যায়নের পাশাপাশি বিনোদন হিসেবে নওয়াবগণ এখানে তাদের বিলিয়ার্ড খেলার ব্যবস্থা করতেন।
বিলিয়ার্ড এমন একটা পশ্চিমা খেলা যা এদেশে সাধারণত অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এবং এখনো তা বর্তমান।
বাংলাদেশে প্রধানত যে সকল স্থানে স্নুকার বা বিলিয়ার্ড খেলার প্রচলন রয়েছে তার মধ্যে নারায়নগঞ্জ ক্লাব, চিটাগাং ক্লাব ও গুলশান ক্লাব অন্যতম। এছাড়াও বিভিন্ন অভিজাত হোটেল-রিসোর্টসহ আর্মি, নেভী বিমান বাহিনীতে এই খেলার প্রচলন রয়েছে।