বন্যাপরবর্তী সময়ে দেশে সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় বন্যাকবলিত এলাকায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ‘লেট জাতের আমন’ ধানের চারা বিতরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বাকৃবি) দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বন্যাপরবর্তী সময়ে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও দেশের খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলা করতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পানি নেমে যাওয়ার পরে দ্রুত এ চারা সরবরাহ করা গেলে দেশের খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলা করে চাল আমদানি খরচ হ্রাস করা সম্ভব হবে জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৪ থেকে ২১ দিন বন্যা অবস্থা চলমান থাকলে এবার আমন সিজনে ধান উৎপাদন করা যাবে না বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। সেক্ষেত্রে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে আমাদের বিশাল পরিমাণে চাল আমদানি করতে হবে। সে অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের খুব দ্রুতই চারা তৈরি করা শুরু করতে হবে। যেন পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই চারা বিতরণ করতে পারি।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ মুন্না বলেন, প্রাথমিকভাবে ৫ একর জায়গার ব্যবস্থা হয়েছে বীজ বপন করার জন্যে। এটিকে আরো বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। আমরা ধান বীজ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমরা যত বেশি বীজ সংগ্রহ করতে পারব তত বেশি বন্যাদুর্গত এলাকায় ধানের চারা রোপণ করতে সক্ষম হবো। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার আশপাশের অঞ্চলে জমি ব্যবস্থা করতে পারলে বেশি ফলপ্রসূ হবে।
বাকৃবির কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম আরিফ হাসান খান বলেন, শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগ বন্যাপরবর্তীতে দেশের খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমরা শিক্ষকরা তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। চারা প্রস্তুত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ একর জমি নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ব্রি-৫২, ব্রি-৭১, ব্রি-৭৫, এবং বিনা-১৬, বিনা-১৭ ধানের জাতগুলো প্লাবিত এলাকাগুলোর জন্য উপযুক্ত হবে। ব্রি-৫২ জাতের ধান পানির নিচে ১৫ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। তবে নতুন করে বীজ থেকে চারা উৎপাদন করতে ২০ থেকে ৩০ দিন সময় লাগবে। বন্যাদুর্গত এলাকায় পানি নেমে যাওয়ার পরপরই যেন চারা রোপণ করা যায় সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খামার ব্যবস্থাপনা শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক জিয়াউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমাদের চারার সঙ্কট রয়েছে। তবে আমরা ৩ একর জায়গা দিয়ে সাহায্য করতে পারব।
নয়া দিগন্ত এর সৌজন্যে।