সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে শ্রমিক সংকটের কারণে হাওরগুলোর পাকা ধান কাটতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২দিন ধরে মাইকিং করা হচ্ছে। এতে এগিয়ে এসেছেন স্কুল, কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকসহ এলাকার রাজনৈতিক কর্মীগণও।
সোমবার থেকে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনায় সোমবার ভোর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কৃষিজাত পণ্যের দোকান ব্যতিত উপজেলার সকল হাটবাজারের ওষুধের দোকানসহ অন্য সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে হাওরের পাকা ধান দ্রুত কাটতে মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে।হঠাৎ করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ বাজার থেকে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করতে আসা লোকজন ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। ফসল তোলার আগ মুহূর্তে এখন থেকে প্রতিদিন শুধু বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে বলে জানা গেছে।
হাওর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাকা ও আধা পাকা ধানের শীষ দুলছে বাতাসে। শ্রমিক সংকট থাকায় কৃষক-কৃষাণি তাদের পরিবার-পরিজন এবং স্বজনদের নিয়ে ফসল তোলার কাজে মাঠে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ভোর রাতের ভারী বর্ষণে অনেক কৃষকের ক্ষেতে হাঁটু পানি জমেছে। ঝড়, শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাত উপেক্ষা করে ধান কাটার কাজে মাঠে লড়ছে কৃষক পরিবারগুলো।
নলুয়া হাওরপাড়ের কৃষক মফিজুর রহমান বলেন, বাহিরের শ্রমিক না আসায় হাওরের পাকা ধান তুলতে এখানকার কৃষক পরিবারগুলো বিপাকে পড়েছেন। দ্রুত পাকা ধান কাটতে সোমবার হাওরপাড়ের মসজিদগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, ধান কাটার শ্রমিক সংকটের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে। ফসল ওঠার আগ পর্যন্ত এই নির্দেশনা থাকবে। আগাম বন্যার শঙ্কা রয়েছে। তাই হাওরে ধান কাটার জন্য ব্যবসায়ীসহ সম্প্রতি বেকার হয়ে পড়া লোকজনকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। তিনি জানান, স্কুল, কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকসহ এলাকার রাজনৈতিক কর্মীগণকে আমরা ধান কাটতে অনুরোধ করছি। ইতিমধ্যে তারা অনেকেই ধান কাটছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জগন্নাথপুরে ১৫টি হাওরে এবার ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ফসল আবাদ করা হয়েছে। হাওরে শ্রমিক সংকট দূর করতে আমরা স্থানীয় কৃষক, স্বেচ্ছসেবক, শিক্ষার্থী, আনসার সদস্যসহ কর্মহীন মানুষকে কাজে লাগাতে চাইছি। আশা করছি দ্রুত হাওরের ধান তোলা সম্ভব হবে।
Powered by Facebook Comments