:: রাঙ্গামাটি থেকে ::
ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের পরিবেশে বৈচিত্র্য রয়েছে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে একসঙ্গে সাফল্যের সাথে কাজ করছে। রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার উত্তর বন গ্রামে, সদর উপজেলার শুকরছড়ি গ্রামে ও লংগদু উপজেলার সোনাই বগা পাড়া গ্রামে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর তত্ত্বাবধানে কম সময়ে অধিক ফলন ও রোগ-বালাইমুক্ত ইরি-এগ্রো প্রকল্পের প্রদর্শনী চাষের নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর ) দিনের শুরুতে কাপ্তাই উপজেলার উত্তর বন গ্রামে স্থানীয় কৃষক মাসুদুর রহমানের জমিতে নমুনা শস্য কর্তন সম্পন্ন করা হয় । উপজেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ ওমর ফয়জুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান ১০৩ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ১ টন, ব্রি ধান ৮৭ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৩ টন, ব্রি ধান ৭২ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ২ টন, ব্রি ধান ৫২ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ১ টন, বি আর ১১ হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ১ টন ধান পাওয়া যায় ।
স্থানীয় কৃষক মাসুদুর রহমান নিজে উচ্চ ফলনশীল এইসব ধানের জাত চাষ করতে পেরে আনন্দিত। তিনি ব্রি ধান ১০৩, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৭২, ব্রি ধান ৫২ ধানের জাত পছন্দ করেন এবং আগামী মৌসুমে অধিক জমিতে চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একই দিনে দুপুরে সদর উপজেলার শুকরছড়ি গ্রামে নীল চন্দ্র চাকমার জমিতে নমুনা শস্য কর্তন সম্পন্ন করা হয় । সদর উপজেলার স্থানীয় কৃষক ইন্দ্র মুজিব চাকমা ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৭২ ও ব্রি ধান ৫২ ধানের জাত পছন্দ করেন। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন পাওয়ায়, আগামী আমন মৌসুমে এই সকল জাতের ধান চাষে উৎসাহিত হন।
রবিবার (২৬ নভেম্বর ) সকালে লংগদু উপজেলার সোনাই বগা পাড়া গ্রামে কাজলা চাকমার জমিতে নমুনা শস্য কর্তন করা হয়। লংগদু উপজেলা রাঙামাটি জেলার একটি পাহাড়ি অধ্যুষিত সীমান্তবর্তী উপজেলা। এই উপজেলার কৃষক কাজলা চাকমা উন্নত জাতের এই সকল ধানের চাষাবাদ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে এসব ধান জাতের চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলে।
প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান ১০৩ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৬ টন, ব্রি ধান ৮৭ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ১ টন, ব্রি ধান ৭২ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৭ টন, ব্রি ধান ৫২ হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ৮ টন, বি আর ১১ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ১ টন ধান পাওয়া যায় ।
পাহাড়ি অঞ্চলে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও এগ্রিবিজনেস এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে জলবায়ু উপযোগী আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উফসি) জাতের কম সময়ে অধিক ফলন, রোগবালাই মুক্ত পাঁচ (৫) ধরনের ধান জাতের হেড টু হেড প্রদর্শনী করা হয়। এসব ধানের জীবনকাল ১২৫ থেকে ১৪০ দিন।
আন্তজার্তিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর বাস্তবায়নাধীন নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে উপজেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. রবিউল আওয়াল, এগ্রিবিজনেস এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল এর প্রজেক্ট অফিসার বাগী মং মারমা, প্রদর্শনী জমির কৃষকগণ সহ সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এলাকার বিপুল সংখ্যক কৃষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে পাহাড়ি অঞ্চলে আন্তজার্তিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর কৃষক পর্যায়ে উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষককে আধুনিক জাতের ধান চাষে আগ্রহী করার জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।