চলমান কৃষি দানা জাতীয় ফসল

এসে গেছে ডায়াবেটিক ধান, ডায়াবেটিস রোগীরাও নিয়মিত খেতে পারবেন ভাত

নিত্য নতুন আধুনিক ধানের জাত উদ্ভাবন করে নিয়মিত চমক দেখাচ্ছেন বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর বিজ্ঞানীরা। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের সুখবর হলো, ‘ডায়াবেটিস রোগীরাও নিয়মিত খেতে পারবেন ভাত’। আবার নতুন উদ্ভাবিত এই জাতটির চালে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে জানিয়েছেন ব্রি’র বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা।

বাঙালির জন্য ভাতের চেয়ে ভালো খাবার হয় না, আর ভাতটা যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্তরাও খেতে পারেন তাহলেতো ‘সোনায় সোহাগা’।


ব্রি’র নতুন উদ্ভাবিত ধানের এমন জাতটি হচ্ছে- ব্রি ধান১০৫। এজাতটির চাল ‘ডায়াবেটিক চাল’ হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সাধারণত খাদ্যে জিআই ৫৫ বা আর নীচে থাকলে এটি কম জিআই সম্পন্ন বলা হয়ে থাকে। ব্রি’র গবেষণায় ব্রি ধান ১০৫-এ জিআই এই মাত্রার নিচে পাওয়া গেছে।


বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডঃ খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা জানান, এ ধানটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআই সম্পন্ন হওয়ার কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক চাল’ বলা হচ্ছে। অতিরিক্ত ছাটাইকৃত চাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার আমাদের দেশে মাড় ফেলে ভাত খাওয়ার কারণে এমনিতেই পুষ্টি কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ব্রি ধান১০৫ বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে কারণ এটিতে পুষ্টিমান যেমন আছে তেমনি জিআই অনেক কম।


লো জিআই-সম্পন্ন ধানে গ্লুকোজের পরিমাণ কম থাকে। ধান/গম/ভূট্টাসহ যে কোন খাবারে আলফা অ্যামাইলেজ ইনহিবিটর যত বেশি থাকবে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তত কম হবে, অর্থাৎ ঐসব খাদ্য পরিমিত পরিমান খাওয়ার পরও রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হয়।

ইনস্টিটিউট বলেছে, ব্রি ধান১০৫ থেকে পাওয়া চালে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামূলক কম এবং সে কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক ধান’ বলা হচ্ছে।

এ জাতের ধান থেকে তৈরী ভাত, রুটি, কেক, বিস্কুট এবং নুডুলসসহ সব ধরণের পরিমিত পরিমাণ খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বোরো মওসুমে চাষ উপযোগী ব্রি ধান১০৫ জাতটির গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭ দশমিক ৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে সাড়ে আট টন পর্যন্ত ফলন দিতে পারে।

চিকন ও লম্বা জাতের এ এজাতটির জীবনকাল ১৪৮ । ধানটিতে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।


এ জাতের ধান থেকে পাওয়া চাল রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও খেতে সুস্বাদু হয়।

Avatar

চাষাবাদ ডেস্ক

About Author

You may also like

চলমান কৃষি

ইরির তত্ত্বাবধানে খাগড়াছড়িতে উচ্চ ফলনশীল ধানের বাম্পার ফলন

খাগড়াছড়ি মহালছড়ি উপজেলার পাকিজাছড়ি গ্রামে এবং সদর উপজেলার ভূয়াছড়ির নতুন বাজার গ্রামে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) তত্ত্বাবধানে কম সময়ে
চলমান কৃষি

সিলেটের বিশ্বনাথে ৩ দিন ব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন

সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প’র আওতায় ৩ দিনব্যাপী (৮-১০ মে) কৃষি